চলতি বছর ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী ৩ হাজার ৮১০টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার শিক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৪৪। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এসএসসি ও সমমানে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে কখনো শুক্রবারে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। এর মধ্যে আবার আজ শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর একদিকে সমাবেশ চলছে। অন্যদিকে বিএনপিরও মহাসমাবেশ চলছে। এরই মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ফলাফল সংগ্রহের সুযোগ ছিল পরীক্ষার্থীদের।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গণভবনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ-সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা। এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারের দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯০ দশমিক ১৮। সবচেয়ে পিছিয়ে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৬ দশমিক শূন্য ৬। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৪।
এ বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭০, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ কম। গতবার দাখিলে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ২২। দাখিলে এবারের ফলাফল করোনার আগে স্বাভাবিক সময়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার চেয়েও বেশ খারাপ হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিক সময়ে অনুষ্ঠিত দাখিলে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ৫১।
এবার দাখিলে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২১৩ জন। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৫ হাজার ৪৫৭ পরীক্ষার্থী। এবার দাখিলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৫, যা গত বছর ছিল ৮৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বছর ২ হাজার ৮২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩০ জন। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৪৫ জন পরীক্ষার্থী, যা গত বছর ছিল ১৮ হাজার ৬৫৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ৮০১ জন এবং ছাত্রী ৭ হাজার ৩৪৪ জন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৭৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এ বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী। গতবার এই বোর্ডের পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক শূন্য ৩। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬৪ হাজার ৯৮৪ পরীক্ষার্থী। এ শিক্ষা বোর্ডে কমেছে পাসের হার। কমেছে জিপিএ-৫।
এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডে পাস করেছে ৭৮ দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী। এবার এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৬২৩ জন। গতবার পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ২৮। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৯ হাজার ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী। এ বোর্ডেও পাসের হার কমেছে। কমেছে জিপিএ-৫-এর সংখ্যাও।
চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ জন। গতবার এই পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৫৩। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৮ হাজার ৬৫৫ জন পরীক্ষার্থী। চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার কমেছে। জিপিএ-৫-এর সংখ্যাও কমেছে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ প্রথম আলো