নোয়াখালীর সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নের একটি জঙ্গল থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। শিশুটিকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর একটি হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাকে কে বা কারা সেখানে ফেলে গেছেন, এখনো সে বিষয়টি জানা যায়নি।
উদ্ধার হওয়া নবজাতকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান মো. সাব্বির নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে একজন এসে তাঁকে জানান, জঙ্গলের ভেতর থেকে শিশুর কান্নার শব্দ আসছে। পরে নবজাতক ছেলেশিশুটিকে উদ্ধার করেন সাব্বির। তিনি শিশুটিকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
মো. সাব্বির আরও বলেন, তিনি নবজাতকটি উদ্ধার করার পর সে বেশ অসুস্থ ছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে নবজাতকের নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি ভিন্ন একটি পরিচয় দিয়ে জরুরি বিভাগের খাতায় নাম লেখান। চিকিৎসক শিশুটির অবস্থা খারাপ দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে দ্রুত জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন তাঁরা সেখানে (সদর হাসপাতালে) না নিয়ে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সাব্বির বলেন, তিনি নবজাতকটির তত্ত্বাবধান করে নবজাতকটির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করছেন। এরই মধ্যে সেনবাগ থানার পুলিশ এসে হাসপাতালে নবজাতকটি দেখে গেছে। শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা শিশুটির লালনপালনের দায়িত্ব নিতে চান।
সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতকটি বেওয়ারিশ কি না, তা তারা জানতেন না। কারণ, হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যখন নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন সঙ্গের লোকজন শিশুটিকে ‘আনোয়ারা ও সোহাগ’ দম্পতির সন্তান হিসেবে খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের একটি মুঠোফোন নম্বরও দিয়ে যান। পরে শিশুটির অবস্থা খারাপ দেখে নিয়ম অনুযায়ী জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিতে বলা হয়। সেখানে নেওয়া হয়েছে কি না, তা তাঁরা জানেন না।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ডমুরুয়া ইউনিয়নের মইশাই গ্রামের জঙ্গলের ভেতর থেকে জীবিত অবস্থায় নবজাতক উদ্ধার হয়েছে। খবর শুনে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে জানতে পারেন, চৌমুহনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। থানার একজন কর্মকর্তা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখে এসেছেন। শিশুটি সুস্থ হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লালন পালনে আগ্রহী ব্যক্তির কাছে শিশুটি হস্তান্তর করা হবে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ প্রথম আলো