প্রতিযোগিতায় হাফেজ ছেলে, দিনমজুর বাবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

Visits:1262

দশ বছর বয়সী হাফেজ মো. জুনায়েদের বাবা দিনমজুর হতদরিদ্র। বাবার নাম মো. ওমর ফারুক। বাড়ি কিশোরগঞ্জের সদর থানার মহিষবের গ্রামে। অনেক কষ্টে অন্যের সহযোগিতায় মাত্র দেড় বছরে হয়েছেন কোরআনের হাফেজ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে জুনায়েদ বয়সে বড়। বাবা এলাকার বিত্তবানদের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। অর্থাভাবে হুমকির মুখে পড়ে তার পড়ালেখা। পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আর-রায়হান ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেয় তার।

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মাত্র দেড় বছরে সে মুখস্থ করেছে কোরআন শরীফের ৩০ পারা। তার প্রত্যাশা সে জিততে চায় সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত ‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’ প্রতিযোগিতার পুরস্কার। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আগ্রহ তার।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত কুরআনের নূর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে এই হাফেজ।

হাফেজ জুনায়েদ সর্বপ্রথম মাদরাসায় ভর্তি হয় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। এরপর মাত্র দেড় বছরে পুরো কোরআন মুখস্থ করে। বর্তমানে সে মাদরাসার জ্যেষ্ঠ হাফেজদের সামনে প্রতিনিয়ত পুরো কোরআন তিলাওয়াত করে।

প্রতিযোগিতার ফাঁকে তার সঙ্গে কথা বললে সে কালের কণ্ঠকে জানায়, বড় হয়ে একজন আলেম হতে চায় সে। দ্বিন ইসলামের খেদমত করবে। মাদরাসার শিক্ষক হয়ে দরিদ্র ছাত্রদের কল্যাণেও কাজ করতে চায় এই খুদে হাফেজ।

সিদ্ধিরগঞ্জের আর-রায়হান ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার শিক্ষক মুফতি আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা হাফেজ জুনায়েদের বিষয়ে বলেন, আমি তার সরাসরি শিক্ষক। জুনায়েদ যথেষ্ট মেধাবী ছেলে। তার ইচ্ছাশক্তি অনেক বড়। আল্লাহ পাকের রহমতে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করে তাকে এই পর্যন্ত আনতে পেরেছি। আমাদের প্রত্যাশা, বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় কোরআনের হাফেজদের যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে, সেখানে সে ভালো ফলাফল করবে। বিশ্বের দরবারে কোরআনের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হাফেজ জুনায়েদ ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ। বসুন্ধরার মতো প্রতিষ্ঠান এ রকম দরিদ্র ও মেধাবী বাচ্চাদের পৃষ্ঠপোষকতা করলে বাংলাদেশে হাফেজের সংখ্যা যেমন বাড়বে, বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ দেশ হিসেবে পরিচিতিও পাবে।

হাফেজ জুনায়েদের বাবা দিনমজুর ওমর ফারুক এমন আয়োজনের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তার ছেলে এমন একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। এমন আয়োজন করে বসুন্ধরা গ্রুপ কোরআর ও ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়েছে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ কালের কন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *